দামি সিগারেট কি স্বাস্থ্যের জন্য কম ক্ষতিকর
ওহ, মানুষ কত কিছু জানতে চায়, এটা আবার কি ধরনের প্রশ্ন, তাই না? একটু মজা করতে আপত্তি নেই। প্রশ্নটা দেখে খুব ভাল লাগলো, অন্য কিছু লোকের মুখে আমার একটা সময়োপযোগী প্রশ্ন ছিল। তাই আমি বলতে আগ্রহী ছিলাম।
সর্বোপরি, একটু আলোকপাত করবেন না যাতে এটি তাদের জন্য সহায়ক হবে যারা কম দামে আরও ক্ষতি বা উচ্চমূল্যে কম ক্ষতি জানতে চান:
সিগারেটের জন্য তামাকের ধরণ
এখানে, দামটি তামাকের উপর নিভর করে । নিকোটিনের পরিমাণ বা তামাকের ধরণ দ্বারা নির্ধারিত হয় তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যাইহোক, আমাদের মতো অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশে, সিগারেট যা বিক্রি হয় তা তামাকজাত দ্রব্যের মধ্যে বেশি থাকে, যার ফলে সেই অঞ্চলগুলিতে প্রচুর ধূমপান সম্পর্কিত ক্ষতি বা রোগ হয়। আরেকটি বিষয় হলো, আমাদের দেশে সাধারণত যেসব সিগারেট বিক্রি হয়, তার বেশির ভাগেরই দাম কম, তাই নিকোটিন বা তামাকের মান ঠিক করা হয় না। তবে তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল সিগারেটগুলি কিছুটা হালকা বা হালকা ধরণের হয় অর্থাৎ নিকোটিনের পরিমাণ কম। তাই ক্ষতির পরিমাণ একটু কম হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তারপরেও বলব, ক্ষতিটা যে কোনও সিগারেটের থেকে কম নয়। হয়তো তুলনাটা মূলত কম।
উন্নত দেশে সিগারেট বা তামাকজাত দ্রব্যের দাম
আসলে উন্নত দেশে সিগারেট বা তামাকজাত দ্রব্যের দাম আমাদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। কারণ বিদেশি তামাক বা সিগারেটের গুণগত মান। এর সঙ্গে যে কোনও সিগারেটে নিকোটিনের পরিমাণ উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক, যা আমাদের দেশে সচরাচর করা হয় না। আপনি আপনার নিকোটিনের প্রয়োজন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ধূমপান করতে পারেন। যাইহোক, সেখানে দামের বিষয়টি গৌণ কারণ বিদেশে সমস্ত সিগারেটের দাম আমাদের দেশের চেয়ে বেশি।
সিগারেটের ক্ষতিকারক প্রভাব
শেষ পর্যন্ত, আপনি যদি কিছু নিয়ে আলোচনা করেন তবে আপনি আরও সহজেই বুঝতে পারবেন, সিগারেট তামাক পাতা থেকে তৈরি করা হয়। তামাক পাতা বা তামাকের নিয়মিত ব্যবহার মানব স্বাস্থ্যের উপর এর ক্ষতিকারক প্রভাবকে বোঝায়। প্রাথমিকভাবে মূলত তামাক ধূমপানের বিষয় নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। ১৯৫০ সালে রিচার্ড ডল নামে একজন বিজ্ঞানী ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে একটি গবেষণা প্রকাশ করেন যেখানে তিনি ধূমপান এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের মধ্যে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন।
ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সারের হার বাড়ায়
মাত্র চার বছর পর, ১৯৫৪ সালে ব্রিটিশ ডক্টরস স্টাডি নামে আরেকটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়, যা চল্লিশ হাজার ডাক্তারের ২০ বছরের গবেষণার ফলাফল ছিল। সেখানে ধূমপানের সঙ্গে ফুসফুসের সম্পর্ক নিশ্চিত করা হয় যার ভিত্তিতে সরকার ঘোষণা করে যে ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সারের হার বাড়ায়।
তামাক বা সিগারেট সেই সব পদার্থের ব্যবহার বাদ দিয়ে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে পারে, এমন তালিকার শীর্ষে রয়েছে। যারা সিগারেট বা ধূমপান করেন তাদের প্রায় অর্ধেকই এর ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে মারা যান।
সিগারেট আর চা একসাথে
ধোঁয়া ওঠা চা আর জ্বলন্ত সিগারেট, অনেকের কাছেই প্রিয় যুগলবন্দী কিন্তু এই পছন্দের অভ্যাস পালন করতে গিয়ে ডেকে আনছেন মারাত্মক বিপদ। গরম চা স্বাস্থ্যের পক্ষে তেমন ক্ষতিকর না হলেও যারা ধূমপান, মদ্যপান করেন তাঁদের জন্য অস্বাস্থ্যকর। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এরকমই এক তথ্য উঠে এলো। গরম চা এর সাথে হাতে সিগারেট কারও কাছে ফ্যাশন আবার কারও কাছে দৈনিক অভ্যাস। ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক এই প্রচার বিভিন্ন ভাবে সমাজে করা হয়ে থাকে। কিন্তু সব সচেতনতা ওই প্রচার অবধি সীমাবদ্ধ। এই অভ্যাস থেকে মুখ ফেরাতে পেরেছে খুব কম জনই।
অ্যানালস অব ইন্টার্নাল মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে গবেষকরা জানিয়েছেন, যারা নিয়মিত ধূমপান এবং মদ্যপান করেন তাঁদের ইসোফেজিয়াল ( খাদ্যনালি ) টিউমারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাঁরা জানাচ্ছেন, যেসব ব্যক্তি প্রতিদিন অন্তত এক গ্লাস অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান করেন তাঁদের গরম চা এর অভ্যাস শরীরের ক্যান্সারের ঝুঁকি কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়। এর পাশাপাশি ধূমপায়ীদেরও সাবধান থাকার কথা বলা হয়েছে। গরম চা আর সিগারেট ক্যান্সার ছাড়াও শরীরে বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। এর ফলে রক্ত চলাচল বিঘ্ন হতে পারে, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, হার্টে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মত, তামাক এবং অ্যালকোহল এই দুই থেকে দূরে থাকাই হচ্ছে ক্যান্সার রোধের অন্যতম উপায়। হয়তো চা এবং সিগারেট আপনার কাছে প্রিয় যুগলবন্দী হতে পারে কিন্তু এই অভ্যাসের ফলে প্রাণহানির সম্ভাবনা এড়িয়ে দেওয়া যায়না। এই স্বাস্থ্য সচেতন যুগে সঠিক জীবনশৈলী এবং খাদ্যাভ্যাসই হল সুস্থ থাকার একমাত্র পথ।
সিগারেট জন্য চোখের ক্ষতি
দীর্ঘদিন ধরে যারা বিড়ি বা সিগারেট খান বা তামাক জাতীয় দ্রব্যের নেশা করেন, তাদের চোখে ছানি পড়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি। এমনকি ৫-১০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে যারা ধূমপান করছেন, তাদের চোখের স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে। সেক্ষেত্রে অন্ধত্ব অস্বাভাবিক কিছু নয়। কথাগুলো বলেছেন ভারতের দিল্লির এইমস হাসপাতালের চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা বলছেন, শুধু ক্যানসারই নয়, দিনে ২০টা সিগারেট খেলে চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারাতে হতে পারে। যেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চিকিৎসা করেও দৃষ্টিশক্তি আর ফেরানো যায় না।
একটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এখনো পর্যন্ত দিল্লির এইমস হাসপাতালে যতজন দৃষ্টিশক্তিহীন রোগী এসেছেন, তাদের পাঁচ শতাংশ তামাকের কারণেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।
সিগারেট যেভাবে ধরে
সাধারণভাবে স্কুল বা কলেজে পড়ানোর সময়ে নেহাতই কৌতূহলবশে কিংবা বন্ধুদের পাল্লার পড়ে ধূমপান করা শুরু করেন বেশিরভাগ যুবক-যুবতী। পরবর্তীকালে নেশার কবলে পড়ে যান তারা। চেষ্টা করেও ধূমপানের নেশা আর ছাড়তে পারেন না অনেকেই কিন্তু নেশা যতই থাকুক না কেন, শরীরের কথা চিন্তা করে ধূমপান যে বর্জন করা উচিত, সে কথা মনে করিয়ে দিলেন ভারতের চিকিৎসকরা।
নিজস্ব প্রতিবেদন
ধূমপান স্বাস্থের পক্ষে ক্ষতিকারক, এ কথাটা আমরা সকলেই জানি। একাধিক গবেষনায় দেখা গিয়েছে, সিগারেট বা বিড়ির ধোঁয়ায় রয়েছে প্রায় ১০০ টিরও বেশি ক্ষতিকর রাসায়ানিক। এগুলির মধ্যে ৭০টি ক্যানসারের জন্য সরাসরি দায়ি। অনেকের আবার পছন্দ ফ্লেভার্ড সিগারেট। যেমন, মেন্থল সিগারেট অনেকেই খান। কিন্তু জানেন কি এতে বিপদ আরও বহুগুণ বেশি?
সম্প্রতি এক মার্কিন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, মেন্থল সিগারেট সাধারণ সিগারেটের চেয়েও অনেকগুণ বেশি ক্ষতিকারক। অনেকে মনে করেন মেন্থল সিগারেট খুব হালকা এবং এতে তামাকের পরিমাণ কম, বা এর তামাক সাধারণ সিগারেটের তুলনায় অধিক পরিশোধিত যা স্বাস্থ্যের জন্য তেমন একটা ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু নতুন এই গবেষণা অন্য কথাই বলছে।
সিগারেট দামি হোক বা কম দাম হোক সবই ক্ষতিকর
বিখ্যাত একটি মার্কিন তামাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মিচ জেলার একটি সাক্ষাৎকারে জানান, মিন্ট সিগারেটে তামাকের পরিমাণ মোটেও কম থাকে না। সাধারণ সিগারেটের মতোই একই পরিমাণ তামাক থাকে এতে। এরই সঙ্গে যুক্ত করা হয় বিশেষ রাসায়নিক যা সিগারেটে মিন্ট স্বাদ এনে দেয়। ফলে এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর!