সরকার পতনে জনতার সুনামি দেখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
সরকার পতনে জনতার সুনামি
সরকার পতনে জনতার সুনামি দেখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।তিনি বলেন, জনগণ জেগে উঠেছে। সরকারের পতন হবেই অনিবার্য।
ফ্যাসিবাদী সরকার আওয়ামী লীগ ভেসে চলে যাবে
মানুষ রাজপথ দখল করলে জনতার যে ঢল নামবে, সমুদ্রের যে ঢেউ উঠবে, সেই ঢেউয়ে যে সুনামি সৃষ্টি হবে, সেই সুনামিতে এই ভয়াবহ দানবীয় ফ্যাসিবাদী সরকার আওয়ামী লীগ ভেসে চলে যাবে।পেশাজীবীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আপনারা আপনাদের জায়গা থেকে সমস্ত মানুষকে সংগঠিত করেন। আমরা সবাই সংযুক্ত হয়ে দেশের জন্য, বিএনপির জন্য নয়, এটা তারেক রহমান সাহেবের জন্য নয়, অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ সাহেবের জন্য নয়, রুহুল আমিন গাজী ভাইয়ের জন্য নয়, আমার জন্য নয় এই দেশকে বাঁচানোর জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
রাজপথ দখল করতে হবে
আজকে আমার জাতি বিপন্ন হয়ে পড়েছে, আমার দেশের গণতান্ত্রিক যে আত্মা সেই আত্মাকে তারা ধবংস করে দিয়েছে, সেই আত্মাকে বাঁচানোর জন্য আজকে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন নামতে হবে। আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে রাজপথ দখল করে এদের সরাতে হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর
তিনি বলেন, আমাদের দাবিগুলো খুব সামান্য। সেই দাবি হচ্ছে- দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, সংসদ বাতিল করতে হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন করে সত্যিকার অর্থেই জনগণের একটা সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাই।
আওয়ামী লীগ সরকারের গুম রেকর্ড
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার নির্বাচনের আগে বিভিন্ন দেশের চাপে বিরোধীদলকে সভা সমিতি করতে দিচ্ছে। আমরা গতকালও একটা সমাবেশ করেছি। খুব বেশি ঝামেলা করে নাই। আজকে আমরা এখানে বসে আছি, চারদিকে আমাদের কর্মী ভাইয়েরা আছে। খুব ঝামেলা করছে না। কারণ একটাই তারা দেখাচ্ছে যে, আমরা খুব গণতান্ত্রিক দল। আমরা খুব ঝামেলা করি না। এটা প্রতারণা। প্রতারণা তাদের চরিত্রের সাথে জড়িয়ে আছে। গত ১৫ বছরে তারা আমাদের ৬০০ এর অধিক রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে, ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ তাদের তারা গুম করেছে। সহাস্রাধিক কর্মীকে তারা হত্যা করেছে। সেইদিন ভোলায় বিনা কারণে দুইজন তরুণ নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের চুরি-ডাকাতি
সরকারের বিরুদ্ধে সম্পদ পাচারের অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধবংস করছে। ব্যাংকগুলো খালি হয়ে যাচ্ছে, এত লুটপাট সব নিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বাহিরে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও লুট হয়ে যায়। কিছুদিন আগে আমাদেরকে সিঙ্গাপুর দেখাচ্ছিল, এই যে মেট্রো রেল হচ্ছে, বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হয়ে যাচ্ছে, মালয়েশিয়া হয়ে যাচ্ছে, টানেল হচ্ছে। আর এখন রিজার্ভ নামতে নামতে একেবারে নিচের দিকে নামা শুরু হয়েছে। শ্রীলংকাকে বাহাদুরি দেখিয়ে আড়াই শত মিলিয়ন ডলার লোন দিল, এখন আপনার আই এম এফের কাছে, বিশ্ব ব্যাংকের কাছে, এডিবির কাছে আবার সেই লোন চাচ্ছে। এরা চুরি করে ডাকাতি করে আমাদের দেশের সমস্ত সম্পদকে পাচার করেছে। আন্তর্জাতিক একটা প্রতিষ্ঠান বলছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর ৮২৭ কোটি ডলার পাচার হয়।
তিনি বলেন, সরকার জ্বালানি তেলে দাম বাড়িয়েছে। এখন আবার বলছে সমন্বয় করব। আরে আন্তর্জাতিক বাজারে তো তেলের দাম কমতে শুরু করেছে। আমেরিকাতে আমার ছোট বোন থাকে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম তোমাদের ওখানে তেলের দাম কত? সে বলল আগে ১৪ ডলার ছিল তা কমে ৩ ডলারে এসেছে। আর আমাদের আগে যে দাম ছিল ৭৮ টাকা তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১২৫ টাকা। তাহলে সমন্বয় কোথায় করছেন? এখন বিশ্ব বাজারে দাম কমছে আপনারা কমাচ্ছেন না কেন?
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথেই আন্দোলন
সভাপতির বক্তব্যের ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথেই আন্দোলন করতে হবে। অন্য কোনো বিকল্প নেই।
সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় পেশাজীবী সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলাম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মামুন আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্য জোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
Right
ReplyDelete